বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ইসলাম প্রদত্ত ৫ নির্দেশনা
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে ইসলাম সকলের জন্য রেখেছে নির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা। ইসলাম সবার জন্য সমান, সহজ। আজ জেনে নিবো ইসলামে বাজার নিয়ন্ত্রণে কী নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ঃ-
Table of Contents :
- মজুতদারি বন্ধ করা
- ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের লাগাম টেনে ধরা
- প্রয়োজনে সরকারিভাবে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া
- ঘুষ ও চাঁদাবাজি বন্ধ করা
মজুতদারি বন্ধ করা
বাজারে সংকট সৃষ্টির উদ্দেশ্যে অযথা পণ্য মজুদ করার মাধ্যমে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। ফলে দ্রব্যমূল্যের দামের কারণে সাধারণ জনগোষ্ঠীর নাভিশ্বাস উঠছে, জনজীবন হয়ে উঠছে দুর্বিষহ। অযথা খাদ্য মজুদ করার ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে ইসলামে। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, নবীজি (সা.) বলেন, ”দুর্নীতিপরায়ণ ছাড়া কেউ পণ্য মজুতদারি করে না”
’ (তিরমিজি, হাদিস : ১২৬৭)
ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের লাগাম টেনে ধরা
ব্যবসায়ীক দালাল হলো এমন চক্র, যারা দাম বাড়ানোর জন্য ক্রেতা-বিক্রেতার লেনদেনের মধ্যে হস্তক্ষেপ করে। সিন্ডিকেট তৈরি করে প্রান্তিক কৃষকদের ঠকায়, বাজারে মালামাল এনে ক্রেতাদেরও বোকা বানায়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) তাঁর উম্মতদের এ ধরনের কাজ করতে নিষেধ করেছেন। ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত আছে, নবী (সা.) বলেছেন, বাজারের বাইরে গিয়ে পণ্যদ্রব্য আনিত বণিকদলের সঙ্গে মিলিত হবে না, পশুর স্তনে দুধ জমিয়ে রাখবে না এবং দাম বৃদ্ধি করে একজন অন্যজনের পণ্য বিক্রয় করে দেওয়ার অপকৌশল অবলম্বন করবে না।
(তিরমিজি, হাদিস : ১২৬৮)
প্রয়োজনে সরকারিভাবে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া
শরিয়তের মেজাজ হচ্ছে সরকার সাধারণত পণ্য মূল্য নির্ধারণ করে দেবে না। তবে এই হুকুম বাজার স্বাভাবিক থাকা অবস্থায়। কিন্তু ব্যবসায়ীরা যদি অতিরিক্ত মূল্য নেয় এবং বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে, তখন জনগণের ভোগান্তি লাঘবের জন্য সরকার পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দেবে, যতক্ষণ না বাজার স্বাভাবিক হয়।
(তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম : ১/৩১৩)
ঘুষ ও চাঁদাবাজি বন্ধ করা
বাজারে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির আরেকটি কারণ হলো, বেপরোয়া ঘুষ ও চাঁদাবাজি। প্রভাবশালী নেতা, ক্যাডার ও প্রশাসনের লোকজন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায় করে থাকে।
আবার অনেক ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা নিজেদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে বিভিন্ন মহলে ঘুষ দিয়ে থাকে। পরবর্তী সময়ে এসব ঘুষ ও চাঁদার অর্থ নিজেদের বিক্রীত পণ্যের মাধ্যমে উসুল করে। ফলে পণ্যের দাম স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক গুণ বেড়ে যায়। দিন শেষে এর ধকল পোহাতে হয় সাধারণ ক্রেতাদের। হাদিস শরিফে এ ধরনের চাঁদা আদায়কে জুলুম সাব্যস্ত করে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘সাবধান! তোমরা কেউ কারো ওপর জুলুম করো না। সাবধান, কারো সম্পদ তার অন্তরের সন্তুষ্টি ব্যতীত অন্য কারো জন্য হালাল নয়। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২০৬৯৫)
0 Comments
please Wait