------মিরাকল মিশন ------ শেষ পর্ব


---লেখকঃ Khalid Hasan ---

--------শেষ পর্ব ------



জ্ঞান ফিরার পর চোখ খুলেই দেখলাম আমি একটা ছোট্ট কামড়ায় শুয়ে আছি।পুরো কামড়ায় কিছুই নেই শুধু কোণায় একটা বেড বসানো। সেখানেই শুয়ে আছি আমি। এখানে কিভাবে এলাম জানিনা। রুমে লাইট জালানো আছে। এখন দিন না রাত সেটাও বুঝতে পারছি না। রাতের ঘটনাগুলো মনে পড়তে লাগলো। আর ম্যাক্সের হিংস্র চেহারাটাও মনে পড়লো আমার। এরা আমার সাথে এমন করছে কেনো! কি চায় এরা আমার কাছে? প্রশ্ন গুলো বার বার মনের ভিতর উকি দিতে লাগলো। চশমাটা এখন চোখে নেই। সম্ভবত চশমাটার কারণেই মাথার পেছনটা এত ব্যথা করছে। মাথার পিছনে হাত দিয়ে বুঝার চেষ্টা করলাম কেটে গেছে কিনা। না যায়নি। হঠাৎ কামড়ার দরজা খুলে প্রবেশ করলো প্রফেসর স্টিফেন আর ম্যাক্স। রাগে আমার গা জলতে লাগলো।
--তুমি মনে হয় এখনো আমাদের উপর রাগ করে আছো খালিদ। অবশ্য রাগ করাটাই সাভাবিক। তবে ধীরে ধীরে সব ক্লিয়ার বুঝতে পারবে। আসলে তোমার সাথে যা করা হয়েছে তা সম্পুর্ণ একটা পরীক্ষা ছিলো।
..কথাগুলো বলেই প্রফেসর মুচকি একটা হাসি দিলেন।
..আমার মাথায় কিছু ঢুকলো না। ম্যাক্স এইবার বলতে শুরু করলো.
--আসলে তুমি যে ভূতগুলোকে দেখেছো তার কোনো সত্যতা নেই। আসলে তোমাকে অজ্ঞান করার পর তোমাকে এক ধরনের 3 ডি চশমা পড়িয়ে দেয়া হয়েছিলো এবং একটা খোলা ময়দানে ছেড়ে দেয়া হয়েছিলো। মূলত জায়গাটা আমাদের একটা পূর্ব প্রস্তুত করা একটা পরীক্ষার হল বলা যায়। সেখানে সকল এজেন্টের পরীক্ষা নেয়া হয়। চোখে 3D চশমা থাকার কারণে আমরা তোমাকে যা দেখিয়েছি তুমি তাই দেখেছো কেননা চশমাটা আমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিলো। আর ওই ভূতগুলো 3d করা ছিলো। তবে আমি সেখানে বাস্তব ছিলাম তোমাকে অজ্ঞান করার জন্য।
..এসব বলে তারা দুজনেই হাসতে শুরু করলো.. আমার একটু ইতস্তত বোধ হলো ..
--আচ্ছা যদি পরীক্ষাই নিবেন তো আগে বলা উচিৎ ছিলোনা? একটু প্রস্তুতি নিতাম তাহলে। এখন কি আমি পাশ নাকি ফেইল?
ম্যাক্স বললো..
--তুমি ফেইল করতেই পারোনা। মূলত অলৌকিক কিছুর সামনে পড়ে গেলে তুমি কি করবে সেটাই আমাদের দেখার ছিলো। অনেকেই এর আগে এখানে পরীক্ষা দিয়েছে। ভূত দেখে অনেকেই অজ্ঞান হয়ে গেছে কিন্তু তোমাকে ইনজেকশন দিয়ে অজ্ঞান করার প্রয়োজন হয়েছে। তাই তুমি পাশ করেছো। তুমি অলৌকিক জিনিসের সাথে লড়তে পারবে। তবে তোমার বুদ্ধিমত্তা আর ভিতরের শক্তিকে আর একটু জাগিয়ে নিও তাহলেই হয়ে যাবে।
...আমি মাথার পিছনে হাত রেখে আবার ব্যাথাটার তীব্রতা অনুভব করতে লাগলাম ..
--চিন্তা করোনা খালিদ ,ব্যাথাটা সাময়িক থাকবে। কিছুক্ষণ পরেই সেরে যাবে। কথাটা বললো ম্যাক্স।
--তুমি এখন একটু রেস্ট নাও। তারপর আমার অফিস রুমে চলে এসো তোমার সাথে জরুরি কিছু কথা আছে। কথাটা বললো প্রফেসর। এরপর তারা আমার রুম থেকে প্রস্থান করলো।
আমার রুমটার একপাশে একটা বাথরুম আছে। সেখানে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। তারপর প্রফেসর এর অফিস রুমে চলে গেলাম। তার অফিস খুজে পেতে সমস্যা হলোনা কাছাকাছি ছিলো। অফিস রুমে ঢুকতেই দেখলাম প্রফেসর কিছু জিনিসপত্র নিয়ে ঘাটাঘাটি করছেন ...
--আসো খালিদ তোমার জন্যই বসে আছি। তোমাকে কিছু জিনিস দেয়ার আছে।
আমি তার সামনে কিছু অস্ত্র আর কিছু ডিভাইস দেখতে পেলাম। তিনি আমার দিকে একটা বন্দুক এগিয়ে দিলেন। একটা ওয়ালথার হ্যান্ডগান।
--এইটা তোমার কাছে রেখে দাও খালিদ। তোমার আত্মরক্ষায় কাজে লাগবে। এটা অলৌকিক কোনো অস্ত্র নয় তবে বিপদে কাজে দেবে।
--আমি অস্ত্রটা নিতে পারবো না। এসবের কি দরকার?
--খালিদ তোমাকে এখন সবকিছুই করতে হবে যা তুমি আগে কখনোই করোনি। তুমি মিরাকল মিশন ফোর্সের একজন এজেন্ট। আর তার কারণে তুমি তোমার মিশনে অনেক সময়ই বিপদের সম্মুখীন হবে। বিপদে এগুলো তোমার অনেক কাজে লাগবে। তবে সাবধানে রাখবে। মনে রাখবে খুন করা অপরাধ কিন্তু আত্মরক্ষা করা অপরাধ নয়।
..প্রফেসর এর কথা মতো সব কিছুই নিলাম।
--এখন আমার কি করতে হবে? প্রশ্ন করলাম আমি।
--তোমার এই জায়গায় আর কোনো কাজ নেই এখন। তুমি এখন ফিরে যেতে পারো। তুমি নিজেই তোমার মিশন খুজে নিতে পারবে। তুমি অলৌকিক কিছুর সন্ধান পেলেই সেটার সমাধান করাই হবে তোমার মিশন। মনে রাখবে তুমি এমএমএফ এর একজন এজেন্ট তাই অলৌকিক সবকিছুই তোমার মিশন। তোমার আশেপাশেই ছড়িয়ে আছে কত অলৌকিক বিষয় বস্তু সেগুলো সমাধান করো। আর তোমার দাদুর আদর্শ টা ধরে রেখো। আশা করি তোমার এডভেঞ্চার গুলো অনেক রোমাঞ্চকর হবে। তোমার এখানে নিয়ে আসার উদ্দেশ্য হলো তুমি উপযুক্ত কিনা সেটা জানা। এখন এখানে তোমার পড়ে থেকে কোনো কাজ নেই। তবে তোমার কোনো প্রয়োজন হলে তুমি আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবে। তোমার হাতের ওই ঘড়ির মাধ্যমে অথবা তোমার দাদুর কম্পিউটার দিয়ে।
..প্রফেসর কথা শেষ না করতেই ম্যাক্স এসে হাজির হলো।
--খালিদ তৈরী হয়ে নাও তোমাকে ফিরিয়ে দিয়ে আসার সময় হয়েছে।এসেই কথাটা বললো ম্যাক্স....
--হুম অনেকদিন বাড়িতে যাইনা। মা বাবাকে মনে পড়ছে খুব।
আমার কথাটা শুনে তারা একটু হাসলো।
--কি ব্যাপার হাসছো কেনো তোমরা?
--তুমি এখানে এসেছিলে মাত্র 24 ঘন্টা আগে। বললো ম্যাক্স।
আমি অবাক হলাম না। সম্ভবত বার বার অজ্ঞান করার কারণেই মনে হচ্ছে আমি অনেক দিন যাবত এখানে পড়ে আছি।
..
আমি প্রফেসর কে বিদায় জানিয়ে ম্যাক্স এর সাথে বেড়িয়ে পড়লাম। স্পেস শিফট্ এ উঠার আগে ভবনটার দিকে তাকালাম। জানিনা আবার কবে আসা হবে এখানে .. তবে যাই হোক ভালোই অভিজ্ঞতা হলো এখানে এসে। এবারে যাওয়া যাক। দেখি কোনো অলৌকিক বিষয়ের সমাধান করতে পারি কিনা।
.
এরপর ম্যাক্স আমাকে রেখে যায়। সেই জায়গায় যেখান থেকে আমাকে নিয়ে গেছিলো। বাসায় ফিরে মা বাবার কড়া কথা যোগাযোগ করিনি কেনো তাই। কিভাবে বুঝাবো আমি যে অন্যকোথাও ছিলাম। সবকিছুই কেমন যেনো সপ্নের মতো ঘটে গেলো।
..
মিরাকল মিশনের শুরু সবে এখানেই।এটা শুধুমাত্র একটা অভিজ্ঞতার গল্প। শীঘ্রই আসছি মিরাকল মিশনের রোমাঞ্চকর একটা মিশন নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন।
.
-----সমাপ্ত -----
.
মূলত এখন থেকে আমার এডভেঞ্চার গল্প গুলো মিরাকল মিশনের সাথে সম্পর্ক যুক্ত হবে। ভয় দেখানোর আর রোমাঞ্চকর গল্প উপহার দেয়ার একটা ভয়াবহ টপিক। লাইক কমেন্ট দিয়ে সবাইকে পাশে দেখতে চাই।
Reactions

Post a Comment

0 Comments