---মিরাকল মিশন :ফরেস্ট মিসট্রি ---


--লেখকঃ Khalid Hasan ---

-------একাদশ পর্ব --------

.

রবিন আবার বলতে শুরু করলো
--শাহজালাল স্যারের এমন গাজাখুরি গবেষণায় সরকার টাকা খরচ করতে পারবে না বলে তার কোনও অনুমতি ছিলো না। কিন্তু তিনি তাতে দমে গেলেন না। নিজের খরচেই গবেষনার কাজ করার সিদ্ধান্ত নিলেন। আর জনমানবহীন গহিন জঙ্গলে নিজের ল্যাব স্থাপন করালেন তাও আবার মাটির নিচে যাতে কেউ জানতে না পারে তার গবেষনার ব্যাপারটা। আমরা যেহেতু এইসব কাজে নতুন ছিলাম তাই আমাদের একটু কৌতুহল ছিলো। বিশেষ করে মায়ার অনেক বেশি আগ্রহ ছিলো। সবাই মিলে গবেষনার কাজ চালিয়ে যেতে লাগলাম। শাহজালাল স্যার আমাদের সবাইকে বললেন, "গবেষনার ব্যাপারটা গোপণ রাখছি কারণ এটা মানবজাতীকে আমি হঠাৎ করেই অবাক করে দিব আমি। মানুষ হয়ে যাবে অনেক শক্তিশালী। জানোয়ারদের চেয়েও শক্তিশালী। সাধারণ মানুষের থেকেও দশগুণ বেশি শক্তিশালী। এতে মানুষের কাজ হয়ে যাবে সহজ। এছাড়া মানুষ পাবে মৃত্যুর পরও জীবিত থাকার স্বাদ। আর বয়সের দিক দিয়ে থাকবে নিখুঁত। চেহারায় বয়সের কোনো ছাপ পড়বে না। ভাবতেই অবাক লাগছে তাইনা। মানুষকে এটা উপহার দিয়ে তাক লাগিয়ে দেবো আমি " কথাগুলো বলে হো হো করে হাসছিলেন তিনি। কদিন ল্যাবে কাজ করার পর একটা ঔষধ তৈরি করা হলো। একটা বিষ্ময়কর তরল। এখন সেটা প্রয়োগ করে ফলাফল দেখার সময়। ইনজেকশন এর মাধ্যমে কারো শরীরে প্রয়োগ করতে হবে। কিন্তু কার শরীরে প্রয়োগ করে টেস্ট করা হবে তা ভেবে পাচ্ছিলেন না শাহজালাল স্যার। আর এখানে মানুষ ছাড়া অন্য কোনো প্রাণীর দেহে কাজ হবেনা। কিন্তু কে রাজি হবে এটা নিতে। তাই একদিন গোপনে তিনি আমাকে বললেন যে মায়ার শরীরে এটা টেস্ট করবেন। বিষয়টি তিনি মায়ার কাছ থেকে গোপণ রাখলেন। পরেরদিন সকালে আমরা সবাই শাহজালাল স্যারের কথামতো মায়াকে বেধেঁ ফেলি। আর বেডে শুইয়ে দেই। মেয়ে বলে এতগুলো পুরুষের সাথে পেরে উঠেনি সে। মায়া শুধু চিৎকার করে বলতে লাগলো, "স্যার আমাকে ছেড়ে দিন। আমার মনে হচ্ছে আমরা কোনো ভুল ড্রাগস আবিষ্কার করেছি। হিতে বিপরীত হতে পারে।" ...কিন্তু শাহজালাল স্যার ধমক দিয়ে বললেন, "চুপ কর ছুকরি আর প্রস্তুত হ ইতিহাসের সাক্ষী হওয়ার জন্যে। আমার গবেষণা সর্বপ্রথম তোর উপরে ফলাবো .. এরপর মানুষ তোকে দেখবে আর আর আমাকে বাহবা দিবে। আর আমার কাছে আসবে এই ড্রাগস নিতে। বিদেশী রা আমার সাথে চুক্তি করবে এই ড্রাগস এর জন্য। ভাবতেই কত ভালো লাগছে। এখন চুপ কর আর নিজেকে নিয়ে গর্ব কর। আমার আবিষ্কার আজই সফল হবে।"
.
এরপর আমরা তার শরীরে সেই তরল প্রয়োগ করি। কিন্তু সাথে সাথেই সে মারা যায়। শাহজালাল স্যার অবাক হয়ে যায়। এমনটা হওয়ার কথা ছিলোনা। তবে আমরা সবাই তার মারা যাওয়ার ব্যাপারটা গোপণ রাখলাম। তার মৃতদেহ বাধা অবস্থায় পড়ে রইলো। মূলত শাহজালাল স্যার আবিষ্কার করেছেন একটা ভাইরাস। পরের ঘটনা থেকেই জানতে পেরেছি। আমরা পরের দিন সকালে যখন ল্যাবে যাই তখন দেখি মায়ার দেহটা গায়েব হয়ে গেছে। আর দড়িগুলোও ছেড়া পরে আছে। এরপর আমরা সবাই চিন্তিত হয়ে পরি। শাহজালাল স্যার তখন আমাদের মাঝে একটা গোপণ তথ্য ব্যক্ত করে। মূলত তিনি যেই তরলটা আবিষ্কার করেছেন সেটা কোনো সাধারণ তরল নয়। তিনি নাকি জীববিদ্যার পাশাপাশি জাদুবিদ্যার চর্চা করেন। আর তার দুই বিদ্যার মিলনেই তৈরি করেছেন সেই অবিস্মরণীয় তরল। তবে তিনি এর আগেই ভাইরাস টার প্রতিষেধক আবিষ্কার করে রেখেছেন। কথাগুলো বলার পরেই তিনি আমাদের মাঝ থেকে পালিয়ে যান আর ল্যাবের দরজা বন্ধ করে আমাদের বন্দী করে রেখে পালিয়ে যান। তাকে আর কখনো খুজে পাওয়া যাইনি। যাইহোক আমরা তখন এন্টিভাইরাস টা খুজতে লেগে গেলাম। কিন্তু খুজে পাওয়ার আগেই ল্যাবের দরজা ভেংগে প্রবেশ করলো একটা ভিন্নরূপে র জানোয়ার। পায়ের দিকটা বাঘের মতো আর আর দাঁতগুলো বাঘের মতো বড় বড় নখ। অবাক হয়ে লক্ষ করলাম মুখটা মায়ার মতোই কারণ নাকফুল টা এখনো তার নাকে। আমরা পালানোর চেষ্টায় ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। কিন্তু মায়ার শরীর একটা জানোয়ারের মতোই হিংস্র হয়ে গেছে। আমি চিৎকার করে মায়াকে বললাম, "মায়া আমরা তোর বন্ধু। আমাদেরকে মারিসনা। "মায়া আস্তে আস্তে সাভাবিক হতে লাগলো। এরপর সে কাদতেঁ লাগলো মানুষের রূপ নেয়ার পর। কেদে কেদে আমাদের বলতে লাগলো, "আমাকে কেনো মেরে ফেলা হলো? এখন আমার হাতে কেউ বাচবে না। আমার রক্তের তেস্টা পেয়েছে খুব। শাহজালাল স্যার মানুষকে মৃত্যুর পরও জীবিত করার ঔষধ আবিষ্কার করেছে কিন্তু সেই মানুষ মৃত্যুর পর কি খেয়ে থাকবে তা,ভাবেনি। মৃত মানুষের খাবার হচ্ছে জীবিত মানুষের রক্ত। "কথাগুলো বলেই সে আবার হিংস্র পশু হয়ে যায় আর আমাদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে।রক্ত চুষে খায় আমাদের।
.
রবিন তার গলার দিকটা খুলে দেখালো। দুইটা দাতের দাগ বসে আছে। দুইটা লম্বা গর্ত হয়ে আছে সেখানে। আমি জিজ্ঞেস করলাম
--তারপর কি হলো?
--মূলত ভাইরাস এর খেলা শুরু হলো। আমরা সবাই আবার জীবন পেলাম। কিন্তু আমাদের ছিলোনা হৃদয় স্পন্দন। হার্টের কোনো ক্রিয়া ছিলোনা। আমরা হয়ে গেলাম জীবন্ত লাশ। যাকে বলে ভ্যাম্পায়ার। প্রতি অমাবস্যা রাতে আমাদের রক্তের প্রয়োজন পড়তো।
.
মায়া একদিন শাহজালাল স্যারের জাদু শিক্ষার বইটা পেয়ে গেলো। আমাদের কাছ থেকে ব্যাপারটা সে লুকিয়ে রেখেছিলো।এরপর শুরু হলো তার শয়তান সাধনা আর মায়া শিক্ষা চর্চা। একসময় সে ভয়ঙ্কর ডাইনিতে পরিণত হয়ে গেলো। তার জাদুর মাধ্যমে আমাদের অদ্ভুত নরকিয় শাস্তি দিতে পারতো। আস্তে আস্তে সে আমাদের সবাইকে গোলাম বানিয়ে রাখলো। আর মায়া জাদু দিয়ে পৃথিবীর নিচে আস্তে আস্তে গড়ে তুললো তার সাম্রাজ্য। আমরা তার অবাধ্য হলেই শাস্তি শুরু হয়ে যেতো। কেউ ভয়ে কিছুই বলতে পারতাম না। একবার আমি বইটা চুরি করার চেষ্টা করি।
.
কিন্তু মায়ার কাছে ধরা পড়ে যাই। সে আমাকে কঠিন শাস্তি দেয়। তারপর সে বইটা আগুনে পুড়ে দেয় যাতে কেউ পড়তে না পারে আর কেউ সেই জাদু শিখতে না পারে। সেই বইতে ছিলো মায়া জাদু নিয়ে যত কথা। সে ওইসব নিজের মাথায় মুখস্তের মাধ্যমে ধরে রাখে। আর হয়ে যায় শক্তিশালী এক ডাইনি। এতবছর পরেও তার কিছুই হয়নি। এখনো রূপ যৌবনে অটুট সে। তাকে প্রতি অমাবশ্যার রাতে মানুষের রক্ত এনে দিতে হয়।আর মায়া যার রক্ত চুষে খায় তারাও আমাদের মতোই হয়ে যায়। একপ্রকার জীবিত লাশ। তাই আমরা সেই জঙ্গলে যাই মানুষের খোজে যেই জঙ্গল থেকে তোমাদের ধরে এনেছি।
.
আমি এবার আরো অবাক হয়ে গেলাম।
--তার মানে সেদিন রাতে ওই জানোয়ার গুলো তোমরাই ছিলে?
--হ্যাঁ, আমরাই ছিলাম।
--আচ্ছা রবিন আমার মনে হচ্ছে একমাত্র মায়া ছাড়া তোমরা কেউই এই জগতে সুখে নেই। তোমরা মায়াকে মারার অস্ত্রটা কি খুজার চেষ্টা করোনি?
--মায়াতো মৃত।
--না মানে ওকে পুরোপুরি ধ্বংস করার অস্ত্র?
--সেই অস্ত্র মায়া তার মায়া জাদুর দারা সংরক্ষণ করে রেখেছে। আমরা তার ধারেকাছেও যেতে পারবো না।
--আচ্ছা তোমরা কি এই নরকের জীবন থেকে মুক্তি পেতে চাওনা? গোলাম হয়ে বেচে থাকতে কি ভালো লাগে?
--হ্যাঁ এই জীবন কেউই চাইনা। শুধুমাত্র মায়াকে ধ্বংস করতে পারলেই আমরা সবাই মুক্তি পাবো।কিন্তু মায়াকে শেষ করা সহজ নয়।
--আচ্ছা যদি আমি তোমাদের সাহায্য করি?
--কি বলছো! মায়া জানতে পারলে তোমাকে রাজা তো দূরের কথা শেষ করে ফেলবে।
--ধুর বাদ দাও। মায়া এখন আমার প্রেমে অন্ধ। আর আমরা ওর এই দুর্বলতার সুযোগ নিতে পারি। শুধু তুমি যদি আমাকে সাহায্য করো।
--না না আমি তা পারবো না। ধরা পড়ে গেলে আমাকে অনেক কঠিন শাস্তি দিবে। আমি না পারবো মরতে না পারবো বাচতে।
--ওহ কাম অন রবিন ... একবার যদি আমরা মায়াকে শেষ করে দেয়ার অস্ত্রটা পাই তাহলে তুমিও মুক্তি পাচ্ছো আর আমার বন্ধু্রা আর আমি মৃত্যুর হাত থেকে বেচে যাবো। আর এভাবে রহস্যময় ভাবে মানুষ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাটাও থেমে যাবে। দেখো আমাদের একটু সাহসই কিন্তু পারে অনেক কিছুর সমাধান করে দিতে।
.
রবিন আমার দিকে অবাক দৃষ্টি তে তাকাতে লাগলো।
--খালিদ,আমি প্রথমবারের মতো একজন সাহসীকে দেখছি যে মায়াকে শেষ করতে চায়। কিন্তু আপসোস তোমার এই সাহস বৃথা। কারণ মায়া সেই অস্ত্র তার মায়ামন্ত্র দিয়ে হেফাজত করে রেখেছে। কেউ সেখানে পৌছাতে পারবে না।একমাত্র মায়া নিজেই জানে সেই অস্ত্র কোথায় আছে। অস্ত্রটা একটা তরল। সেই তরলে ডুবিয়ে রাখা আছে একটা ইঞ্জেকশন। ইনজেকশন টা সেই তরলে পূর্ণ করে মায়ার শরীরে দিতে পারলেই তার সব শেষ। তবে সেটা করতে হবে অমাবশ্যার রাতে।
--আমি পৌছাবো .. আর মুক্তি পাওয়ার জন্য তোমরা প্রস্তুত হও। আমি মুক্তি দেবো সবাইকে এই শয়তানের মায়া খেলা থেকে। অনন্তকাল এই মায়া খেলা চলতে দেয়া যাবেনা। তাহলে একসময় পৃথিবীর বিপর্যয় হবে। তখন পৃথিবী তে শয়তানের একতরফা রাজত্ব শুরু হয়ে যাবে। তার আগেই আমি ওকে থামিয়ে দেবো। তুমি আমার বন্ধু রবিন। তুমি আমাকে এইসব ঘটনা বলে অনেক উপকার করলে। আমি কথা দিলাম যেভাবেই হোক এই নারকীয় জীবন থেকে মুক্তি দিবো তোমাদের।
তুমি শুধু আমাকে এখান থেকে বের হয়ে যাওয়ার রাস্তাটা দেখিয়ে দাও ব্যস। মায়াকে ধ্বংস করার পর যাতে পৃথিবী তে যেতে পারি।
--আচ্ছা তুমি যদি ধ্বংস না করেই পালিয়ে যাও? তাহলে তো মায়া আমাকে ছাড়বে না।
--রবিন আমাকে বিশ্বাস করো। আর আমি তোমাকে কথা দিয়েছি তোমার মুক্তি দিবো। আর আমি কাপুরুষদের মতো বিপদ দেখে পালিয়ে যাওয়ার লোক নই। বরং বুদ্ধি আর মেধা দিয়ে বিপদের লড়াই করি। আর সমাধান করি রহস্যের।
--আচ্ছা ঠিকয়াছে চলো তোমাকে দেখাই এখান থেকে বেরোনোর রাস্তা।
..রবিন আর আমি দোলনা থেকে উঠে পড়লাম। হাটতে লাগলাম রবিনের সাথে। রাজ্যের এক প্রান্তে নিয়ে গিয়ে থামলো সে। একটা ঝড়নার ধারে। সামনে একটা বিশাল পাহাড়।
--মূলত এই পাহারের গায়ে একটা গুহা আছে। গুহাটা লতাপাতা দিয়ে ঢেকে দেয়া আছে। গুহাতে ঢুকলেই কিছুদুর এগিয়েই একটা শিড়ি দেখতে পাবে। একদম উপরের দিকে উঠে গেছে। সেই শিড়ি দিয়ে উঠতে থাকলে সেই জঙ্গলের শেষ মাথায় গিয়ে পৌছাবে। শিড়ির শেষ মাথায় একটা দরজা থাকবে। আমি তোমাকে একটা চাবি দিচ্ছি। এটা ওই দরজার তালা খুলতে কাজে লাগবে। দরজা খুলে বেরোলেই দেখবে তোমরা জঙ্গলে আছো।
..রবিন আমার হাতে তামার চাকতির মতো গোল কিছু একটা দিলো। আমি সেটা সাবধানে রেখে দিলাম। এটাই সেই দরজার চাবি।
.
এরপর আমরা ফিরে এলাম সেখান থেকে। রবিন আমাকে শয়ন কক্ষ দেখিয়ে দিলো। আমি ঘুমানোর প্রস্তুতি নিলাম। কিন্তু কিছুতেই ঘুম আসছে না। রবিনের কাছে জানতে পারলাম অমাবশ্যার আর তিনদিন বাকি আছে। এরই মধ্যে মায়াকে শেষ করার অস্ত্রটা হাতাতে হবে। তানাহলে সব শেষ। রাতে না ঘুমিয়ে চিন্তা করতে লাগলাম। কিভাবে সেই অস্ত্র হাতে পাওয়া যায়!!!!!!
.
ঘুম আসছে না। ওদিকে আমার বন্ধুরা কারাগারে বন্দী জীবন পার করছে। তারা কত কষ্টেই না আছে। আর আমি আরামের বিছানায় শুয়ে আছি।
.
বিছানা থেকে উঠে কয়েদখানার দিকে ছুটলাম। গিয়েই দেখি সবাই ফলমূল খাচ্ছে আর গল্প করছে। বাহ খুব ভালো তো আমি ওদিকে চিন্তায় ঘুমাতে পারছি না আর এনারা গল্পে মজে আছে।
--কিরে খালিদ কি খবর? রানীর সাথে সময় কিরকম যাচ্ছে?
মশকরা করে কথাটা বললো আসাদ কিছুটা রিমিকে শুনিয়ে শুনিয়ে। রিমি তেলে বেগুনে জলে উঠে আসাদকে মারতে লাগলো।
--আরে থামবি তোরা? তোরা যে কারাগারে আছিস সেইটা কি মাথায় আছে? আমাদের দেশের জেলখানার কেউ তোদের এইসব কান্ড দেখলে হার্ট এটাক করতো এতক্ষণে। মাথায় তো তোদের দেখি একটুও চিন্তা নাই। আর আমি ওইদিকে চিন্তায় মরছি।
সবাইকে ধমক দিয়ে কথাগুলো বললাম আমি। আসাদ আমার কথা শুনে বললো ..
--কেন রে এখান থেকে পালানোর পথ পাসনি এখনো?
--পেয়েছি পেয়েছি। আমরা কোথায় আছি জানিস? তিনশো ফুট মাটির গভীরে।
--কস কি মমিন! আন্ডারগ্রাউন্ড এ আছি আমরা! তাইতো কই রাইত দিন বুঝা যায়না ক্যান!
--শুধু এইসবই না আরো অনেক অলৌকিক কাহিনী ঘটে এইখানে। আমি ভাবছি তোদের ছাড়াবো কিভাবে।
..রিমি বলে উঠলো হঠাৎ ..
--তোর কি আর আমাদের নিয়ে ভাবার সময় আছে? তুইতো তোর রানীকে নিয়ে ব্যস্ত।
রিমির কথা শুনে মেজাজটা গেলো খারাপ হয়ে। যার জন্য করলাম চুরি সেই বলে চোর।
--দেখ রিমি আর যেনো এইসব কথা না শুনি।
রিমি মুখ ভেঙ্গচি কেটে বললো..
--ঠিক আছে ঠিক আছে।উচিৎ কথা তো সবারই গায়ে লাগে।
রিমির কথা নিয়ে আর গভীরে গেলাম না। যতই বলবো ততই তর্কের পরিমাণ বেড়ে যাবে।
--তোরা শোন, এখান থেকে বেরুতে হলে রানী মায়াকে আগে খতম করতে হবে। তানাহলে পালিয়ে যাওয়া সম্ভব না।
--আচ্ছা তাহলে মেরে ফেল।
বললো রিমি
--মাথামোটা রানী আগে থেকেই মৃত। এই রাজ্যের সবাই মৃত। এরা সবাই জীবন্ত লাশ। ভ্যাম্পায়ার।
.
তারপর সবাইকে খুলে বললাম মায়ার কাহিনী
.
--বলিসকি! রিমির মতো বাকি রাও চমকে গেলো।
--রানীকে শেষ করতে পারলেই সবাই শেষ। অমাবশ্যার আর তিন দিন বাকি। অমাবশ্যার রাতেই কাজটা করতে হবে। সেদিন হয় আমি মরবো নয়তো এই মায়া রাজ্য ধ্বংস হবে। তবে আমার আগে অস্ত্রটা খুজে পাওয়া দরকার। সেটা ছাড়া কিছুই সম্ভব না। কি করি বলতো?
.
পাশ থেকে আম্রাথু বলে উঠলো তখন
--বাবু আমি বলিকি রানীর সাথে প্রেমের অভিনয় টা বাড়িয়ে দিন। মেয়েরা সবসময় বোকা হয়। রানীকে বোকা বানিয়ে অস্ত্রটা হাতিয়ে নেয়া যেতে পারে। তবে সাবধানে। ধরা পড়লে কিন্তু শ্যাষ
--বাহ আম্রাথু তোমার মাথায় তো হেব্বি বুদ্ধি।
আম্রাথুর প্রসংশা করার সময় দেখলাম রিমি রাগে গজ গজ করছে। একেতো রানীর সাথে ফস্টিনস্টি করার আইডিয়া তার উপর মেয়েদের বোকা বলেছে আম্রাথু। আসাদ আর রাহাত রিমির এই ভাব ভঙ্গি দেখে মজা নিতে লাগলো। আমি এইসব দেখার জন্য আর দাড়ালাম না। আমাকে মায়ার সাথে লেগে থাকতে হবে। ছুট দিলাম অন্দরমহলের দিকে।
.
.
------চলবে-----
Reactions

Post a Comment

0 Comments