---মিরাকল মিশন :ফরেস্ট মিসট্রি ---


--লেখকঃ Khalid Hasan ---

-------দ্বাদশ পর্ব --------

.

অন্দরমহলের সামনে যেতেই দাসীরা আমাকে আটকালো। এরপর চেহারা দেখেই তারা আমাকে কিছু বললো না আর। রাজার উপর কথা বলার কারো অধিকার নেই। তবে আমি ভিতরে গেলামনা। মায়াকে ডেকে দিতে বললাম। মায়া অন্দরমহল থেকে বেড়িয়ে এলো শুরু করে দিলাম আমি মিথ্যা প্রেমের অভিনয়। মায়া আমাকে দেখেই জিজ্ঞেস করলো..
--কি গো রাজা রানীকে ছাড়া ঘুম আসছে না বুঝি ..
--হুম .. মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলো.. তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছিলো। তাইতো ছুটে এলাম দেখতে।
--ইশ ধন্য হলাম রাজা। ধন্য হলো আমার এই রূপের আগুন। মন ভরে দেখো আমায়। কেউ কিছু বলবে না।
আমি এদিক সেদিক তাকালাম। চারপাশে দাসী আর প্রহরী দিয়ে ছড়ানো।
--ইয়ে মায়া চলনা প্রাসাদের ছাদে যাই। যেখানে কেউ থাকবে না,।নিরিবিলিতে শুধু তুমি আর আমি। সারাক্ষণ প্রেমে মজে থাকবো।
--আচ্ছা রাজা যেমনটি চাইবে তেমনটি হবে।
মায়া সবাইকে থামিয়ে দিলো। শুধু আমরা দুজন হাটতে লাগলাম। ছাদে চলে গেলাম। আমি এইবার নিজে থেকেই মায়ার হাত ধরে ফেল্লাম। মায়া শুধু মুচকি মুচকি হাসছে।
--কি ব্যাপার খালিদ, আজ দেখছি অনেক রোম্যান্টিক হয়ে আছো..
--হ্যাঁ ভেবে দেখলাম, অনন্ত কাল যখন তোমার সাথে ভালোবেসেই কাটাবো তো এখন থেকেই ভালোবাসা শুরু করি।
--ইশ রে।এতো প্রেম করতে শিখলে কিভাবে? একটু আগেও তো কিছু বলতে পারছিলে না।
--এমন সুন্দরী মেয়ে পাশে থাকলে প্রেম এমনিতেই জেগে উঠে।
মায়া সাথে সাথে আমাকে জরিয়ে ধরলো।জরিয়ে ধরে কাদতেঁ লাগলো। আমি একটু হতচকিত হয়ে গেলাম। আমি একটু বেশি বাড়িয়ে বললাম নাকি। মেয়েটা দেখছি ইমোশনাল হয়ে গেছে।
--খালিদ আমি অনেক সাধারণ একটা মেয়ে ছিলাম। জীবিত থাকতে কখনো কাউকে ভালোবাসতে পারিনি। তার আগেই মরে যেতে হয় আমাকে। আজ মনে হচ্ছে আমার সেই আশা পূরন হয়ে গেছে। এই প্রথম কোনো ছেলেকে আমি জরিয়ে ধরে কাদছি। আমার যে কতটা সুখ হচ্ছে বলে বুঝাতে পারবো না। তোমার জন্য আমি সব করতে পারবো খালিদ। তুমি যদি বলো আমি তোমার জন্য এনে দিবো ১০১ টা নীল পদ্ম। তুমি যদি চাও এনে দিবো সহস্রাধিক গোলাপ। তুমি চাইলে আকাশে বেলী ফুলের বৃষ্টি ঘটাবো। তুমি চাইলে তোমার জন্য আমি আকাশের চাদও এনে দিতে পারি। শুধু বলো সারাজীবন এইভাবে আমাকে জরিয়ে ধরে ভালোবাসায় আগলে রাখবে।
.
আমি হা করে মায়ার কথাগুলো গিলছিলাম। মায়া আমাকে এইবার ছেড়ে দিয়ে চোখের দিকে তাকালো। আমি দেখলাম মায়ার চোখে জল। মুছে দিলাম তা।আর ভাবতে লাগলাম মায়া তো আমাকে ইমোশনাল করে দিচ্ছে। না দুর্বল হয়ে গেলে চলবে না। আমি জাস্ট অভিনয় করছি। মায়ার এই মায়া কান্নায় গলে গেলে চলবে না। তাহলে মৃত্যু কে বরণ করে নিতে হবে।
.
--কি হলো খালিদ কিছু বলছো না কেনো? কি ভাবছো আমি রানী হয়েও এতোটা দুঃখ কেনো পাচ্ছি? আরে পাগল একজন মেয়ে জীবনে কি চায়। প্রতিটা মেয়েই তার জীবন সঙ্গিকে কাছে পেতে চায়। ভালোবাসা পেতে চায় ভালোবাসা দিতে চায়। আমিও ব্যতিক্রম নই। অনেক কাল একা থেকেছি। কিন্তু তোমাকে দেখার পর মনে হয়েছিলো তোমাকে আমার চাই। জীবন সঙ্গি হিসেবে। তোমাকে এমন ভালোবাসা দিবো যার কাছে পৃথিবীর সকল ভালোবাসা তুচ্ছ। তুমি শুধু আমার।
.
আমি মায়ার কথায় কিছুই বলছি না। শুধু নিজেকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছি। না জানি কখন মায়ার এইসব ইমোশনাল কথায় অভিনয় ছেড়ে সত্যি সত্যি প্রেমে পড়ে যাই। অভিনয়ে ভীষণ কাচা আমি। আর আমি অনেক আবেগি। কিন্তু না মায়ার কথায় আবেগকে পশ্রয় দেয়া যাবেনা। যেভাবেই হোক ওকে ভুলিয়ে ভালিয়ে তরলটার সন্ধান পেতে হবে।
.
--মায়া আর কেদোনা সোনা। বুকে আসো।
মায়াকে জরিয়ে ধরলাম। মায়াও আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো। মায়ার কানে কানে বললাম।
--মায়া একটা আবদার ছিলো।
--বলোনা গো। তার জন্য অনুমতি নিতে হয় নাকি । তোমার সব আবদার পূরন করবো।
--আসলে আমার বন্ধুরা কারাগারে বিরক্ত বোধ করছিলো। ওদের ছেড়ে দেয়া যায়না? ওরাও একটু রাজ্যটা ঘুরে দেখতে চায়।
--ঠিক আছে আমি রবিনকে বলে দিবো তাদের ছেড়ে দেয়ার জন্য। তবে মনে রেখো অমাবশ্যার রাতে ওরা সবাই আমাদের একজন করে হয়ে যাবে।
--হ্যাঁ হ্যাঁ .. তা তো বটেই। আমি যেখানে আছি আমার বন্ধুরাও তো সেখানেই থাকবে।
--হ্যাঁ এইতো বুদ্ধিমান রাজা।
.
--আচ্ছা আমি তোমার রাজা আর তুমি আমাকে আলাদা জায়গায় রেখেছো কেনো? আমরা কি একসাথে থাকতে পারিনা এক ঘরে। সারারাত ভালোবেসে কাটাতাম।
--ধুর পাগোল। খুব বেশি ভালোবাসায় মানুষ খুব বেশি কাছে চলে আসে। আর কাছে চলে আসলে ব্যাপারটা মানসিক থেকে শারিরীক চাহিদার দিকে চলে যায়। কিন্তু এখন সেটা সম্ভব নয়।
--মানে? আমি ঠিক বুঝলাম না।
--ওরে কচি সোনা আমার এটাও বুঝো না? মানে হলো যদি তুমি নিজের প্রতি কন্ট্রোল হারিয়ে আমার সাথে শারিরীক মিলনে আকৃষ্ট হও তাই আমাদের একসাথে থাকা যাবেনা। কারণ আমি মৃত আর তুমি এখনো জীবিত। আমার শরীরে মায়ার আগুন বইছে। তাই তোমাকে আগে মরতে হবে।
--হ্যাঁ হ্যাঁ মরবো তো বটেই। কিন্তু আমি তোমার সাতে থাকতে চাই একই ঘরে। বিশ্বাস করো আমি তোমাকে ছুয়েও দেখবো না।শুধু মন ভরে তোমার রূপ অবলোকন করবো। এইটুকু কি করতে পারবে না আমার জন্যে?
--ইশ তুমি দেখি অনেক ধৈর্য হীন ছেলে। ওকে বাবা তাই হবে। কিন্তু অমাবশ্যার আগে কিন্তু কিচ্ছু করবে না বলে দিলাম।
অমাবস্যা কেনো তোকে কোনোদিন কিছুই করবো না শালি। একবার যখন আমার অভিনয়ের ফাদে পা দিয়েছিস তখন তুই আর বেশিদিন এই ধরণীতে থাকবি না। মনে মনে বললাম কথাগুলো।
.
সেদিন অনেক্ষণ গল্প করলাম। পরের দিন আমার বন্ধুদের ছেড়ে দিলো কারাগার থেকে। তারা সবাই অবাক হয়ে রাজ্যটা দেখতে লাগলো। আমি মায়ার পেছনে লেগে আছি সারাক্ষণ। মায়া কি করে না করে তাই দেখে চলেছি। একবারও সেই অস্ত্রের ব্যাপারে কোনো কিছুই বললো না। এদিকে মায়া স্নানে গেছে আর আমি অন্দরমহলের সামনের দোলনায় বসে ভাবছিলাম। হঠাৎ কোথা হতে রিমি এসে পেছন থেকে আমার গলা জরিয়ে ধরলো।
--হারামি রানীর সাথে খুব পাকামো চলছে না? আজ তোর একদিন কি আমার একদিন।
--ওই ছাড় বলছি ছাড় ..মায়া দেখে ফেললে আমার প্ল্যানের বারোটা বেজে যাবে।
--যাক। ছাড়ছি না আর। আমার ভালোবাসার মানুষকে কোনো ডাইনির সাথে ফস্টিনস্টি করতে দিবোনা। আজ তুই আমাকে ভালোবাসবি।
মাথামোটা মেয়ে বলে কি!
--দেখ এইরকম করলে কিন্তু সব শেষ হয়ে যাবে। আমরা মায়ার কাছে ধরা পড়লে এইখানে সারাজীবনের জন্য আটকে থাকতে হবে।
--তোর ওইসব কথা এখন শুনার সময় নেই আমার।
রিমি মূহুর্তে আমার সামনে এসে দাড়ালো। আর সাথে সাথে জরিয়ে ধরে ঠোঁটে চুমু দিতে লাগলো। রিমি পাগল হয়ে গেছে। আমি ছাড়ানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলাম। আমার দম আটকে যাচ্ছে। হঠাৎ আসাদ আর রাহাত কোত্থেকে উদয় হয়ে হাত তালি দিলো আর শিস্ বাজাতে লাগলো রিমি চমকে উঠে আমাকে ছেড়ে দিলো। রিমি কিছুটা লজ্জায় পড়ে গেলো। আসাদ আবার মশকরা শুরু করে দিলো।
--ইশ দোস্ত ফোনটার চার্য ফুরিয়ে গেছে। নইলে সিনটা ভিডিও করে রাখতাম। তোদের সামনে তো সিনেমার নায়ক নায়িকারা ও ফেইল মারবে। রাহাতো আসাদের সাথে মজা নিচ্ছে।
রিমি সবাইকে চিৎকার করে বললো
-- চুপ কর তোরা। আমার জানকে ভোগ করছে অন্য এক মেয়ে। আমি বেচে থাকতে তা হতে দিতে পারিনা। আমি জীবন দিয়ে হলেও আমার জানকে ওই ডাইনির হাতে ইজ্জত হারাতে দিবোনা। খালিদ শুধু আমার।
..আবার সেই সেইম ডাইলোগ .. উফ এ যুগের মেয়েরা যে কি হয়ে গেছে আজ। যুগ বদলে গেছে।
.
আসাদকে জিজ্ঞেস করলাম ..
--ওই আসাদ,আম্রাথু আর ওর ছেলে কোথায়?
--ওরা ঘুরে দেখছে রাজ্যটা। আমরাও যাবো ঘুরতে।
হঠাৎ মহারানী মায়ার আগমন আমাদের মাঝে। কয়াকটা দাসীর সাথে। সাজ সজ্জায় অপরূপ লাগছে। স্নান সেরে এলো এইমাত্র। ভাগ্যিস আর কয়েকমিনিট আগে আসেনি। আসলে রিমির আর আমার সিনেমার ট্রেইলার দেখলে এতক্ষণে কেল্লাফতে।মায়া জিজ্ঞেস করলো ..
--কি কথা হচ্ছে তোমাদের মাঝে?
আসাদ রাণীর দিক থেকে চোখ সরাচ্ছে না। শালা লুইচ্চা। আসাদ থতমত করে বলছে।
--মহারানী মায়া আপনি অপরূপা।
.. মায়া লজ্জা পেয়ে গেলো। এ ব্যাটা মরবে। লুইচ্ছা সালা। মরার ভয় নাই।
--ধন্যবাদ।
--চলুননা আমাদের সাথে রাজ্যটা ঘুরে দেখি একসাথে। ভাব নিয়ে কথাটা বললো আসাদ। যেনো গার্ল ফ্রেন্ডকে কফি শপে যাওয়ার অফার দিচ্ছে।
ইহ সালার ভাব কি। ইচ্ছা করছে রানীর সাথে এই ব্যাটারে লটকায় দেই। তারপর তার সাথে অনন্তকাল থাক। মায়া আসাদের কথার জবাবে বললো।
--না আমি এখন যেতে পারছি ন। তোমরা খালিদকে নিয়ে যাও আমার একটা কাজ আছে। আর তোমাদের কোনও ভয় নেই এখানে। আমি থাকতে কোনো ভয় নেই।
অগত্যা বিপদ আমারই।মায়া চলে গেলো। মায়া যেতেই আসাদ বললো।
--এই মায়া তো হেব্বি দেখতে। তুই না বললি ও একটা ডাইনি!
--সেই সুন্দর না? বিয়ে করবি? করনা। তবে কিন্তু বিয়ে র আগে মরতে হবে। পারবি তো জীবন দিতে। আমার কথায় আসাদ,চুপ মেরে গেলো।
--ইয়ে না মানে। চল ঘুরতে যাই সবাই।বেচে থাকতে আর কখনো আসা,হবে কিনা এই অলৌকিক জায়গায়। যাওয়ার আগে ভালো করে দেখে নেই।
--তুই চাইলে এখানে থেকে যেতে পারিস। তবে তার আগে মরতে হবে। হিহিহি
--ওহ তোরা কি থামবি? ধমক দিয়ে রিমি আমাদের বললো।
রিমি সবাইকে আমাদের থেকে ইশারায় দূরে যেতে বললো। এইদিকে লোকজন তেমন নেই। রিমি আমার হাত ধরে টেনে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে লাগলো। নিয়ে গেলো একটা ঝড়নার ধারে।
--কিরে রানীর সাথে এইকদিন খুব প্রেম করেছিস না? আজ আমার জালা মিটা। বলেই আমার উপর ঝাপিয়ে পড়লো। ছেলে হয়েও একটা মেয়ের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়াতে পারছিলাম না। জরিয়ে ধরে যেখানে সেখানে কিস করতে লাগলো। উফ আমাকে গিলে খাবে দেখছি। এরপর নরম ঠোঁট দিয়ে আমাকে ভালোবাসতে লাগলো। আমি রিমির ভালোবাসায় নিজেকে সপে দিলাম। গ্রহণ করতে লাগলাম তার ভালোবাসা। তারপর আরো অনেক কিছুই হলো থাক আর সেগুলো বলছি না। শুধু ধরে নিন ১৮+
..
ঘুরাঘুরির পর সবাই আবার প্রসাদে ফিরে এলাম। আসাদ রাহাত জিজ্ঞেস করলো কেমন ঘুরাঘুরি করলাম আমরা। রিমি আমার দিকে চেয়ে মুচকি হাসি দিতে দিতে বললো ..
--আমার মনে হয় খালিদের জীবনের শ্রেষ্ঠ ঘুরাঘুরি এইটা।
-- এইখানে তো দেখি আধুনিক যুগের কোনো কিছুই নাই। কারেন্ট নাই টিভি নাই। মোবাইলের চার্যার নাই।ধুর ভাল লাগে না।
রাহাতের কথায় আমরা সবাই হাসলাম। এই ছেলে আবার গেইম ছাড়া থাকতে পারে না। আসাদ আমার শার্টের কলারে তাকিয়ে আছে। সেটা আমি দেখেই তাকালাম সেখানে। শার্টের কলারে লেগে আছে লিপিস্টিক এর দাগ। রিমির লিপিস্টিক। উফ এই মেয়েরা শুধু ঝামেলা পাকাইতে জানে। ওদিকে মায়া আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে।আমি শার্ট খুলে ফেলে দিলাম আর আসাদের শার্ট ওর গায়ের থেকে খুলে পড়ে নিলাম। মায়া যদি এই লিপিস্টিক ওয়ালা শার্ট আমার গায়ে দেখে তো কেল্লাফতে।
.
মায়া আমাদের কাছে এসেই জিজ্ঞেস করলো..
--তোমাদের ঘুরাঘুরি হলো?
--হ্যাঁ খুব হলো বললো আসাদ। আসাদ আমার লিপিস্টিক ওয়ালা শার্টটা পড়ে ফেলেছে। মায়া তাকিয়ে দেখলো সেই শার্টের কলারে লিপিস্টিক এর দাগ। তারপর রিমির দিকে তাকিয়ে দেখলো ওর ঠোঁটে লিপিস্টিক লেপটে আছে। মায়া একটা হাসি দিয়ে আসাদকে বললো
--তোমাদেরও দেখি ভালোই চলছে। হাহাহা চালিয়ে যাও।
যাক বাবা বাঁচলাম। মায়া আসাদ আর রিমিকে প্রেমিক প্রেমিকা ভাবছে। শার্টটা চেঞ্চ না করলে যে কি হতো। বুকে হাত দিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লাম আমি।
--খালিদ তুমি আমার সাথে অন্দরমহলে চলো। বাকিদের ওই প্রাসাদে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমি মায়ার পেছন পেছন যেতে লাগলাম। মায়া আমার হাত ধরে টেনে নিলো। তারপর অন্দরমহলের দিকে যেতে লাগলো। পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখলাম রিমি রাগে ফুসতেছে। ওহ এসব কি আমার ইচ্ছায় হচ্ছে নাকি। এই মেয়েগুলা বুঝেও না। আমার কি কোনো দোষ আছে নাকি। আমিতো সবাইকে বাচানোর জন্যই নাটক করে যাচ্ছি। রিমি যা ভাবে ভাবুক এখন আমার কাজে লেগে থাকতে হবে।
.
মায়া আমাকে নিয়ে গেলো এক বিশেষ কক্ষে। সেই কক্ষের ভিতরে ঢুকেই আমি অবাক হয়ে গেলাম। সারা কক্ষে ছড়িয়ে আছে ধোঁয়া আর নাকে লাগছে পচা মাংসের গন্ধ। উফ কি বিশ্রী। মায়া আমার হাত ধরে আছে এখনো। আমাকে নিয়ে গেলো সেই কক্ষের একদম শেষ দেয়ালে। সেখানে একটা আয়না দাড় করানো আছে। মায়া হাত ছেড়ে দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললো.
--তোমাকে অনেক কিছু দেখানোর আছে। যেহেতু দুইদিন পরেই তুমি রাজা হতে যাচ্ছো তাই তোমার আগে থেকেই শুরু করা উচিত।
.
ভাবলাম এই সুজোগ। সুযোগটাকে কাজে লাগাতে হবে। কিন্তু মায়া আমাকে আয়নার সামনে নিয়ে এলো কেনো!!!
--কিন্তু এই আয়না দিয়ে কি হবে?
--চেয়ে দেখো আয়নাটার দিকে।
তাকিয়ে দেখতে লাগলাম। সাধারণ আয়নার মতোই।
--কই এইখানে তো তোমার আমার প্রতিবিম্ব ছাড়া কিছুই নেই আর।
--যদি এটাকে আয়না ভেবে থাকো তাহলে ভুল করছো। এটা আমার জাদু জগতে প্রবেশ পথ।একটা গোপণ পথ যা কেউ জানেনা।
--কিন্তু আমাকে যে জানালে?
--তুমি তো আমার ভালোবাসার মানুষ তোমায় ছাড়া আর কাকে জানাবো?
--এতোটা বিশ্বাস করো আমায়?
--যে ভালোবাসতে জানে সে ঠকাতে জানেনা।
আমি মায়ার কথায় কিছুই বলতে পারলাম না। মায়া আমাকে সত্যি অনেক ভালোবাসে। মায়া আমাকে ইশারায় তাকে ফলো করতে বললো।সে আস্তে আস্তে আয়নার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো। একসময় আয়নার ভিতরে প্রবেশ করতে লাগলো। আর পুরোপুরি ভেতরে চলে গেলো। চোখ বন্ধ করে গেছিলো সে। আমি এমন কান্ড দেখে হতবাক হয়ে গেলাম। ছুয়ে দেখলাম আয়নাটা। একটা কঠিন পদার্থের মতোই মনে হলো। তার মানে চোখ বন্ধ করলেই ভিতরে যাওয়া সম্ভব। আমি চোখ বন্ধ করে এগুতে থাকলাম। আর সামনে হাত বাড়িয়ে আয়নাটা ছোয়ার চেষ্টা করতে লাগলাম। তাজ্জব ব্যাপার সেটা আর আমার হাতের স্পর্শ পেলো না। চোখ খুলেই দেখলাম আমি এক অন্য জগতে। চারিদিকে আয়নার ছড়াছড়ি। আমার সামনে দাড়িয়ে আছে মায়া।
--খালিদ বলো দেখি আমরা কোন আয়না দিয়ে প্রবেশ করেছি?
আমি চারিদিকে তাকিয়ে দেখতে লাগলাম।পিছনে তাকিয়ে দেখলাম অনেক গুলো আয়না দাড় করানো। কিন্তু সব আয়না একই মনে হলো।কোনটা দিয়ে এসেছি সেটা বলতে ব্যর্থ হলাম তাই।
.
.
-----চলবে -----
Reactions

Post a Comment

0 Comments